বাংলাদেশ-ভারত সাদা বলের বহুল আলোচিত সিরিজের পূর্ণ সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ১৩ আগস্ট শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, যেখানে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই রোমাঞ্চকর ক্রিকেটীয় লড়াইয়ের মধ্যে ভেন্যু নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্কের বাতাবরণ।
প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী, মোট ৬ ম্যাচের মধ্যে ৪টি হবে ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। বাকি দুটি ম্যাচ বসবে চট্টগ্রামে। সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডে এবং দুটি টি-টোয়েন্টি মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে, আর তৃতীয় ওয়ানডে ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি চট্টগ্রামে।
এই সিদ্ধান্ত অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক ও খেলোয়াড়দের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে মিরপুরের উইকেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনার ঝড় চলছে। ধীরগতির, কম বাউন্স ও অধিক স্পিন সহায়ক পিচ টি-টোয়েন্টির গতিময় ও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পরিপন্থী বলে মনে করেন অনেকে। এমনকি জাতীয় দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজও সম্প্রতি অনুরোধ করেছিলেন যেন অন্তত টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলো ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত হয়।
কিন্তু বিসিবি এসব মতামতের প্রতি নজর না দিয়ে সিরিজের চারটি ম্যাচই মিরপুরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে বিসিবির পক্ষ থেকে বোর্ডের সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “মিরপুরের সুবিধা, নিরাপত্তা ও সম্প্রচারগত সুবিধার দিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটারদের মতামত আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি, তবে সবদিক মিলিয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।”
ভারত দল ১৩ আগস্ট ঢাকায় পৌঁছাবে। এরপর তারা টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বাংলাদেশে অবস্থান করবে। সিরিজ শেষে ১ সেপ্টেম্বর দলটি ঢাকা ত্যাগ করবে। ভারতের হয়ে খেলতে আসতে পারেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, কুলদীপ যাদবসহ শীর্ষস্থানীয় তারকারা। বাংলাদেশ দলে থাকবেন সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মিরাজ ও তৌহিদ হৃদয়ের মতো অভিজ্ঞ এবং উদীয়মান ক্রিকেটাররা।
এই সিরিজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই প্রথম বাংলাদেশ ও ভারত পূর্ণাঙ্গ একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে নিজেদের মাটিতে। এর আগে কেবলমাত্র বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বা একক ম্যাচেই তারা মুখোমুখি হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিরিজ বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় সুযোগ—বিশ্বকাপের আগেই নিজেদের টি-টোয়েন্টি দলকে সাজিয়ে নেওয়ার এবং বড় দলের বিপক্ষে সাফল্য দেখিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর।
তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, মিরপুরের পিচে কতটা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হবে? উত্তেজনা ও প্রত্যাশার মাঝে, এই সিদ্ধান্ত যে বিতর্কের জন্ম দেবে, তা বলাই বাহুল্য।