প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রাজধানীর অভিজাত আবাসন প্রকল্প পূর্বাচলে ছয়টি দামী প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এই দুটি মামলায় অভিযুক্ত ২৯ জনের সবাই বর্তমানে পলাতক বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব মঙ্গলবার মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। দুটি মামলার মধ্যে একটিতে ১২ জন, অন্যটিতে ১৭ জন আসামি হিসেবে রয়েছেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, মামলার পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে আসামিদের গ্রেফতার পরবর্তী হাজিরার ভিত্তিতে।

দুদকের তদন্তে উঠে আসে, পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডে ছয়টি জমি বরাদ্দের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রশাসনিক চাপের মাধ্যমে অনিয়ম করেছেন। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা এই অনিয়মে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

এই দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন কর্মকর্তা, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ, সদস্য, প্রকৌশলী এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। আরও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন একান্ত সচিব সালাহউদ্দিন এবং তদন্তে পাওয়া আরও দুজন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।

এই মামলাগুলোর প্রেক্ষিতে দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এ ধরনের বিচারিক কার্যক্রম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত, আবার অনেকে বলছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ। তবে বিরোধী রাজনৈতিক মহল এবং নাগরিক সমাজের একটি বড় অংশ এই বিচারিক প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানালেও, শেখ হাসিনার অনুসারীরা একে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে উল্লেখ করছেন।

আইনজীবীরা বলছেন, যেহেতু মামলায় সংবিধান অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার আত্মীয়রা অভিযুক্ত, তাই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং আদালতের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের নজর থাকবে।

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এই বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ রায় আগামী দিনের রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এটি একটি বড় পরীক্ষা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ