নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভোজ্যতেল—সয়াবিন তেলের দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। বোতলজাত ও খোলা দুই ধরনের তেলের দাম বাড়িয়ে নতুন দর নির্ধারণ করেছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হয়েছে, যা ভোক্তাদের জন্য বাড়তি ব্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছে।
সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, “বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে ১৮৯ টাকায় বিক্রি হবে, যা পূর্বে ছিল ১৭৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে ১৬৯ টাকা, আগে যা ছিল ১৫৭ টাকা। পাম তেল এবং পাঁচ লিটারের বোতলেও দাম বাড়ানো হয়েছে যথাক্রমে ১৬৯ ও ৯২২ টাকা।”
বৈঠকে মূলত বাজারে তেলের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি ও দাম সংক্রান্ত নানান দিক আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, “দেশীয় তেল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম শুরু করেছে এবং আরও ৬-৭টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনে আসার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। সেইসঙ্গে ডলার সংকট ও আমদানি জটিলতার কারণে ভোজ্যতেল আমদানিকারকরা কিছুটা চাপে রয়েছে। ফলে এসব কারণকে সামনে রেখে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল তেল আমদানিকারক সমিতি, যা এবার সরকারি অনুমোদন পেয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৭৫ টাকা প্রতি লিটার। অর্থাৎ চার মাসের ব্যবধানে আবারও ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা এলো।
নতুন এই দাম বৃদ্ধির খবরে সাধারণ ভোক্তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষরা বলছেন, নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে জীবনধারণ দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারের কাছে তারা দাবি জানিয়েছেন, তেলসহ প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দামে যেন নিয়ন্ত্রণ আনা হয় এবং উৎপাদক, আমদানিকারকদের ওপর সুনির্দিষ্ট নজরদারি জোরদার করা হয়।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ভর্তুকি ও বাজার ব্যবস্থাপনার কার্যকর কৌশল ছাড়া সাধারণ মানুষের জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তারা সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।