‘সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় খুলনা বিভাগে’

খুলনায় ‘সর্পদংশন, প্রতিকার ও চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) কার্যালয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রশিক্ষকের বক্তব্যে বন্যপ্রাণী ও সাপ বিষয়ে গবেষক আবু সাঈদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৪ লাখ মানুষকে সাপে কামড়ায়। যার মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার মানুষ মারা যায়। যারা সাধারণত গরীব মানুষ। সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগের মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল থেকে শুরু করে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা সব অঞ্চলেই সাপের কামড়ের ঘটনা ঘটছে। এই অঞ্চলে গোখরা, কেউটে, কোবরা, রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, খুলনা বিভাগে ১ লাখ দংশনকারীর মধ্যে ৬১৫ জন মানুষ মারা যায়। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

কর্মশালায় আবু সাঈদ বলেন, সাপ কামড়ালে ৬১ ভাগ লোক ওঝার কাছে যায়। যেটা সবচেয়ে বড় ভুল। সাপ কামড়ালে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। রাতের বেলা চলাফেরা করার সময় অবশ্যই আলো (টর্চ-লাইট) ব্যবহার করতে হবে। সাপে কাটলে আক্রান্ত স্থান কাটা, দড়ি দিয়ে খুব শক্ত করে বাঁধা কিংবা আক্রান্ত স্থানে মুখের সাহায্যে রক্ত বা বিষ টেনে বের করার চেষ্টা করা যাবে না। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। খাটের ওপর মশারি ব্যবহার করে ঘুমাতে হবে, মেঝেতে ঘুমাবেন না। ঘাসের মধ্যে কিংবা ঝোপ-ঝাড়ের ভেতর হাঁটার সময় সতর্ক থাকতে হবে। লম্বা জুতা বা বুট পড়া ভালো। সাপ কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশির ভাগ সময় আক্রান্ত ব্যক্তি আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করতে হবে, ভয়ের কিছু নেই। এর চিকিৎসা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. আবু নাসের মোহসিন হেসেন বলেন, সাপ হাতে বা পায়ে কামড়ালে আমরা সাধারণত আক্রান্ত অংশের ওপরে রশি বা গামছা দিয়ে টাইট করে বেঁধে রাখি। এটা একেবারেই ভুল প্রাথমিক চিকিৎসা। সাপের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। অজ্ঞতা দূর করে মানুষকে সচেতন করা গেলেই সাপের কামড়ে আক্রান্ত মানুষকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। সব সাপ বিষধর নয়। তা ছাড়া বেশির ভাগ সাপ কেউ উত্ত্যক্ত না করলে সহসা কামড় বসায় না। সাপকে কোনো ক্রমেই মেরে ফেলা যাবে না। মনে রাখতে হবে সাপ আমাদের সম্পদ।

//এমটিকে

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ