বিশ্ব অর্থনীতিতে আবারও উত্তাল সময়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ফিরে এসেছেন শুল্ক-ভিত্তিক বাণিজ্যনীতির কৌশলে। সম্প্রতি চীনের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন তিনি। যদিও অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের জন্য উচ্চ শুল্ক স্থগিত করেছেন, তবে ১০ শতাংশের ন্যূনতম শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেননি।
চীনের পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্ক আরোপ শুরুতে ছিল ২০ শতাংশ। এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। পরবর্তীতে আরও ২১ শতাংশ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে মোট হার দাঁড়ায় ১২৫ শতাংশ। চীনও চুপ করে বসে থাকেনি। তারা পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
এই বাণিজ্য উত্তেজনার পটভূমিতে চীন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ‘গুণ্ডামি’ বলেছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও-তে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, তারা পেছাতে চায় না। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় তিনি কোরিয়ান যুদ্ধের সময় মাও জেদংয়ের একটি ভিডিও শেয়ার করে বলেছেন, ‘এই যুদ্ধ যত দীর্ঘই হোক, চীন আত্মসমর্পণ করবে না।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন এই বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, যার প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে চীনের পাল্টা জবাব—সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তবে এই অস্থিরতায় খানিকটা স্বস্তি এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে। ট্রাম্প যখন ৯০ দিনের জন্য উচ্চ শুল্ক স্থগিতের ঘোষণা দেন, তখন ইইউ পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাণিজ্যে ক্ষণিকের জন্য হলেও একটি শান্তিপূর্ণ বার্তা দেয়।