ঈদের মৌসুমে টেলিভিশন ও ইউটিউবে প্রচারিত নাটকগুলোর মধ্যে কয়েকটি নাটক অভিনয়শিল্পীদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। ২০২৫ ঈদের সময় একাধিক নাটক একযোগে প্রচারিত হলেও কিছু নাটক বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তাদের চিত্রনাট্য, অভিনয় এবং নির্মাণের কারণে। এসব নাটকগুলোতে অভিনয়শিল্পীরা তাদের পছন্দের নাটকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং বলছেন, কোন নাটক তাদের বেশি ভালো লেগেছে।
এ বছর ঈদে দর্শকদের কাছে সবচেয়ে বেশি আলোচিত দুটি নাটক হলো মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘তোমাদের গল্প’ এবং হাসিব হোসাইন রাখির ‘মন দিওয়ানা’। এই দুটি নাটক বাণিজ্যিকভাবে সফল হলেও এর মূল আকর্ষণ ছিলো তাদের চিত্রনাট্য, অভিনয় এবং নির্মাণশৈলী। বিশেষ করে এই দুটি নাটকের সাফল্য ছিলো অনেকাংশে অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্সের জন্য। ‘তোমাদের গল্প’ নাটকে একের পর এক গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের উপস্থিতি এবং গল্পের সৃষ্টির মাধ্যমে দর্শককে মুগ্ধ করা হয়েছে, আর ‘মন দিওয়ানা’ নাটকটির চিত্রনাট্য এবং সিনেমাটিক নির্মাণ দর্শকদের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়। বিশেষত নাটকের অভিনয়শিল্পী তৌসিফ মাহবুবকে তার চরিত্রে শতভাগ উজাড় করে অভিনয় করতে দেখা গেছে, যা দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।
এরপর অন্যান্য পছন্দের নাটকগুলোর মধ্যে ‘মেঘবালিকা’, ‘মানুষ কী বলবে?’, ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ২.০’ এবং আরো কিছু নাটকও তালিকায় উঠে এসেছে। এই নাটকগুলোকে বিশেষভাবে প্রশংসিত করা হয়েছে তাদের চিত্রনাট্য এবং অভিনয়ের জন্য। পছন্দের নাটক হিসেবে অভিনয়শিল্পীরা ‘হোসেনের গল্প’, ‘স্বপ্নের শেষ ঠিকানা’, ‘খালিদ’, ‘কাছে আসার মানুষ’, ‘বাজি’, ‘একান্নবর্তী’ এবং ‘কানামাছি’-এর নাম উল্লেখ করেছেন।
নাটকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে ‘খালিদ’ এবং ‘মেঘবালিকা’। ‘খালিদ’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন জিয়াউল হক পলাশ, যিনি নাটকের চিত্রনাট্য এবং পরিচালনার মাধ্যমে একটা সুন্দর পারিবারিক গল্প দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে নাটকের পাণ্ডুলিপি, গল্পের গভীরতা এবং চরিত্রগুলোর বাস্তবতা এই নাটকটিকে বিশেষভাবে আলোচিত করেছে। অপরদিকে, ‘মেঘবালিকা’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন জাকারিয়া সৌখিন, এবং এই নাটকটির চিত্রনাট্যও বেশ প্রশংসিত হয়েছে। নাটকের অভিনয়শিল্পী জাকারিয়া সৌখিনের দৃশ্যত উপস্থিতি এবং নাটকের শৈলী দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
তাছাড়া, ‘মানুষ কী বলবে?’ নাটকটির স্যোসাল-সমস্যা নির্ভর গল্প দর্শকদের কাছে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সমাজের প্রতিদিনের সমস্যাগুলো নিয়ে নির্মিত এই নাটকটি সমসাময়িক দর্শকদের কাছে অত্যন্ত বাস্তব মনে হয়েছে। নাটকের প্রাথমিক পাণ্ডুলিপি এবং গল্পের গভীরতা এর প্রধান আকর্ষণ।
অভিনয়শিল্পীরা বলেন, তাদের পছন্দের নাটক হিসেবে ‘তোমাদের গল্প’ এবং ‘মন দিওয়ানা’ নাটকগুলো তাদের হৃদয়গ্রাহী ছিল। এর মধ্যে ‘তোমাদের গল্প’ নাটকের পারিবারিক বন্ধন এবং আন্তরিকতা দেখানো হয়েছে, যা দর্শকদের কাছে স্মরণীয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, ‘মন দিওয়ানা’ নাটকটির সিনেমাটিক নির্মাণ এবং হৃদয়স্পর্শী কাহিনীতে দর্শকরা গভীরভাবে বিনোদিত হয়েছেন। এসব নাটকগুলোর পারিবারিক সম্পর্ক এবং মানবিক অনুভূতির বর্ণনা দর্শকদের মনে এক বিশেষ জায়গা তৈরি করেছে।
তবে, ‘স্বপ্নের শেষ ঠিকানা’ নাটকটি এমন একটি নাটক যা মেধাবী দম্পতির সম্পর্কের জটিলতা এবং তাদের সন্তান না হওয়ার সমস্যাকে কেন্দ্র করে নির্মিত। এই নাটকটি দর্শকদের মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে এবং এর প্রচারের পর থেকে এটি বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে।
এছাড়া, ‘বাজি’, ‘একান্নবর্তী’, ‘কানামাছি’ নাটকগুলোও অভিনয়শিল্পীদের ভালো লাগা তালিকায় রয়েছে। বিশেষত, ‘কানামাছি’ নাটকের নির্মাণ এবং অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এই নাটকটির চিত্রনাট্য, নির্মাণশৈলী এবং অভিনয়শিল্পীদের পারফরম্যান্স অনেকটাই আলাদা ছিল।
একই সঙ্গে, অনেক শিল্পী তাদের পছন্দের নাটক হিসেবে ‘খালিদ’ নাটকের কাহিনি এবং অভিনয়ের প্রসংশা করেছেন। নাটকের চরিত্রগুলো এবং পাণ্ডুলিপির গভীরতা সত্যিই দর্শকদের মনে এক গভীর প্রভাব রেখেছে।
মোটকথা, ২০২৫ ঈদে প্রচারিত নাটকগুলো অভিনেতাদের কাছে একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে থাকবে, যেখানে প্রতিটি নাটকই তার নিজস্ব বিষয়বস্তু, চিত্রনাট্য, এবং অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।