শুল্কের চাপে আইফোনের দাম দ্বিগুণের পথে

শুল্কের চাপে আইফোনের দাম দ্বিগুণের পথে

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্মার্টফোন আইফোন এখন প্রবেশ করতে যাচ্ছে এক নতুন দামের যুগে—যেখানে প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে রাজনীতি ও শুল্কনীতি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১২৫% শুল্ক বসিয়ে দিয়েছেন, যার পরোক্ষ ধাক্কা পড়তে যাচ্ছে আইফোনের মূল্য ব্যবস্থায়।

এই শুল্কের ফলে অ্যাপলের সবচেয়ে বড় উৎপাদন কেন্দ্র চীন থেকে পণ্য আমদানিতে বিপুল পরিমাণ ব্যয় বাড়বে। আইফোনের মতো উচ্চমূল্যের প্রোডাক্টে এর প্রভাব হতে পারে সরাসরি গ্রাহকের ওপর। বিশ্লেষকদের মতে, গ্রাহকেরা যদি সেই শুল্কের পুরো চাপ বহন করতে বাধ্য হন, তাহলে চীনে তৈরি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স-এর দাম বাড়তে পারে ৬০% পর্যন্ত।

এই পরিস্থিতিতে অ্যাপল তাদের উৎপাদন বহুমুখীকরণে উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে, এমনকি কিছু কিছু মডেল তৈরি করে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ ফ্লাইটে আনা হচ্ছে। এতে খরচ তুলনামূলক কম এবং শুল্কমুক্ত। বর্তমানে অ্যাপল ভারতে প্রায় ৬০০ টনের আইফোন তৈরি করে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

তবে সমাধান এত সহজ নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদন সরানো মানে শুধু কারখানা নয়—পুরো সাপ্লাই চেইন, দক্ষ শ্রমিক, কোয়ালিটি কন্ট্রোল—সবকিছুর পুনর্বিন্যাস। ড্যান আইভস নামে এক মার্কিন বিশ্লেষকের মতে, চীনের উৎপাদনের ১০% মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আনা মাত্রই অ্যাপলের খরচ বেড়ে যাবে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, আর সময় লাগবে তিন বছর।

যদিও অ্যাপল জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করবে, তবে তাতেও খুব দ্রুত চীনের বিকল্প গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

এর ফলে আইফোন একটি “প্রিমিয়াম এলিট গ্যাজেট”-এ পরিণত হতে পারে, যা কেবল উচ্চআয়ের মানুষদের নাগালেই থাকবে। আর মধ্যবিত্ত ও শিক্ষার্থীদের জন্য আইফোন হবে এক দূরতম স্বপ্ন।

তাই বলা যায়, বাণিজ্যযুদ্ধ এবার সরাসরি ঢুকে পড়েছে ভোক্তার হাতে ধরা গ্যাজেটে। এই যুদ্ধে কে জিতবে—নতুন মূল্যনীতি, নাকি বিকল্প প্রযুক্তিপণ্য? তা সময়ই বলে দেবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ