চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং চলতি বছরে প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ—ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়ায়। সফরটি শুরু হবে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে। বিশ্ববাণিজ্যে উত্তেজনার আবহে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্রমাবনতির মধ্যেই এই কৌশলগত সফরটি হতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সিনহুয়ার বরাতে জানা যায়, ১৪-১৫ এপ্রিল শি ভিয়েতনাম সফর করবেন, তারপর ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া সফরে থাকবেন। ভিয়েতনামের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ সফরের মধ্য দিয়ে পুনঃনির্মাণ হয়েছে। কিন্তু মালয়েশিয়ায় সর্বশেষ সফর ছিল ১২ বছর আগে, এবং কম্বোডিয়ায় নয় বছর আগে।
এই দীর্ঘ বিরতির পর আবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশে সরাসরি সফরকে চীন কেবল ঐতিহাসিক সম্পর্ক মজবুত করার উপায় হিসেবে দেখছে না—বরং এটি নতুন কৌশলগত অগ্রাধিকার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং ট্যারিফ আরোপের ফলে চীন বিকল্প বাণিজ্যিক রুট ও পার্টনার খুঁজছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চীনের রপ্তানিপণ্যের ওপর গড়ে ১৪৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করায় বিশ্ববাজারে চীনের প্রতিযোগিতা ব্যাহত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া (২৪%), কম্বোডিয়া (৪৯%) ও ভিয়েতনাম (৪৬%)—এই তিন দেশও একইভাবে মার্কিন বাণিজ্য নীতির শিকার। ফলে এই সফরে তাদের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে বেইজিং।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফরের মাধ্যমে চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামো গড়ার চেষ্টা করবে, যেখানে মার্কিন প্রভাব সীমিত থাকবে। পাশাপাশি ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ জোরদার করাও লক্ষ্য।
এই সফরকে শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং চীন-মার্কিন ঠান্ডাযুদ্ধের নতুন এক রূপরেখা বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।