তরুণদের ঘিরে নতুন স্বপ্ন: কর্মসংস্থানে বিএনপির বিনিয়োগ-কেন্দ্রিক বিপ্লবী পরিকল্পনা

তরুণদের ঘিরে নতুন স্বপ্ন: কর্মসংস্থানে বিএনপির বিনিয়োগ-কেন্দ্রিক বিপ্লবী পরিকল্পনা

তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ—এই দর্শনে বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ক্ষমতায় গেলে এক কোটিরও বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। লক্ষ্য একটাই—অর্থনীতিকে নতুন গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, আর সেই গতি আসবে জেন-জির মাধ্যমে।

জেনারেশন জেড অর্থাৎ ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া বর্তমান ১৩ থেকে ২৮ বছর বয়সী প্রজন্মই বিএনপির টার্গেট জনগোষ্ঠী। কারণ, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশই এই তরুণ প্রজন্ম, যাদের না কাজে লাগিয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

বিএনপির দাবি, তারা একটি ‘কর্মনির্ভর প্রবৃদ্ধি’ গড়ে তুলতে চায়। যেখানে মেগা প্রজেক্ট নয়, বরং দক্ষতা ও কর্মসংস্থানই হবে উন্নয়নের সূচক। এ জন্য তারা বিভিন্ন খাতে—বিশেষ করে প্রযুক্তি, কৃষি, পর্যটন, পোশাক শিল্প, হালকা প্রকৌশল, ফিনটেক ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।

দলটির নেতারা বলছেন, কর্মসংস্থানের মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে দক্ষতা তৈরি ও উন্নয়ন। তরুণদের মধ্যে যারা আত্মকর্মসংস্থানে আগ্রহী, তাদের জন্য থাকবে স্টার্টআপ সহায়তা, প্রশিক্ষণ, লোন সুবিধা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা। যারা সরকারি-বেসরকারি চাকরির খোঁজে থাকবেন, তাদের জন্য তৈরি করা হবে প্লেসমেন্ট হাব। পাশাপাশি বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে ভাষাগত দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ২০০১-০৬ মেয়াদে তাদের শাসনামলেই দেশের বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নেওয়া হয়। সে সময়ই ইপিজেড, গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স সেক্টর বড় আকারে প্রসার লাভ করে। এবার তারা সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে আরও গভীরভাবে দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থানের দিগন্ত খুলতে চান।

বিএনপির এক নেতা জানান, “আমরা দেশে এমন একটি পরিবেশ গড়ব, যেখানে বিনিয়োগকারী নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারবে, তরুণরা চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরবে না। বরং তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।”

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি শঙ্কা থাকে—পরবর্তী সরকারের নীতিমালা কী হবে? এ প্রসঙ্গে বিএনপির নেতারা বলেন, তাদের অর্থনৈতিক রূপরেখা এতটাই সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি যে যে কেউ এতে আস্থা রাখতে পারেন। বিনিয়োগবান্ধব আইন, ট্যাক্স সংস্কার, দ্রুত লাইসেন্স ব্যবস্থা এবং দুর্নীতি রোধ করে একটি সুশাসিত বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

জেন-জিদের জন্য পরিকল্পনায় আরও থাকছে:

  • আইটি সেক্টরে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান

  • গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে দক্ষতাভিত্তিক নিয়োগ

  • বিদেশে প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠানোর টাস্কফোর্স

  • স্থানীয় পর্যায়ে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম

  • ফ্রিল্যান্সিং ও রিমোট জব হাব

সর্বোপরি, বিএনপি একটি এমন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় যেখানে তরুণরা শুধু চাকরির জন্য অপেক্ষা করবে না, বরং নিজেরাই হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের চালিকাশক্তি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ