বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন পথচলায় যাত্রা শুরু করল। বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও শান্তিপূর্ণ মহাকাশ কার্যক্রম সহযোগিতা চুক্তি আর্টেমিস অ্যাকর্ড-এ যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের নাম যুক্ত হলো ৫৪টি দেশসমৃদ্ধ এক অভিজাত জোটের তালিকায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, “বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ মহাকাশ গবেষণায় নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
২০২০ সালে আর্টেমিস অ্যাকর্ড গঠনের সময় মূল উদ্দেশ্য ছিল—একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং নিরাপদ মহাকাশ ব্যবহার কাঠামো গড়ে তোলা, যাতে সব দেশের জন্য গবেষণা ও আবিষ্কারের সুযোগ থাকে। বাংলাদেশ এখন এমন একটি নীতিমালার আওতায় এসেছে, যা ভবিষ্যতের মহাকাশ কার্যক্রমের ক্ষেত্রে নৈতিক ও আইনগত দিকনির্দেশনা দেয়।
বাংলাদেশের স্বাক্ষরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশ এ পর্যন্ত এই অ্যাকর্ডে যুক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে—অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল, মেক্সিকো, স্পেন, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডসহ আরও অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ।
চুক্তির আওতায় থাকা দেশগুলো নীতিগতভাবে একমত যে মহাকাশ হবে শান্তিপূর্ণ, বিজ্ঞানসম্মত ও সমতা ভিত্তিক। কোনো একটি রাষ্ট্র এককভাবে চাঁদ, মঙ্গল বা অন্য কোনো গ্রহ বা উপগ্রহ দখল করতে পারবে না। এর পরিবর্তে সহযোগিতার ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে সবাই।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি এক অনন্য অর্জন। কারণ এটি শুধু আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নয়, বরং ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, মহাকাশ শিক্ষা ও গবেষণা, এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরির বড় সুযোগ এনে দেবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “বাংলাদেশের এই চুক্তিতে অংশগ্রহণ বৈশ্বিক মহাকাশ রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠায়। উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণার শান্তিপূর্ণ ও নীতিগত অংশীদার হতে চায়—এটি বিশ্বের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।”