সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৩১ জুলাই) সারাদেশে সব মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশ করবে বিএনপি।
শনিবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ রাজধানীতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর যে অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। তার প্রতিবাদে আগামী ৩১ জুলাই সারাদেশে সব মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। রোববারই (৩০ জুলাই) আমরা এ কর্মসূচি পালনের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আগামীকাল সরকারি দল রাজপথে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। তাই একই দিনে কর্মসূচি দিয়ে সংকট সৃষ্টি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করবো, এ গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হবে না।
কবে নাগাদ এক দফা সরকার পতনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী দুই-একদিনের মধ্যেই সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের কাঁধে সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো চেপে বসা অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অনির্বাচিত জাতীয় সংসদ বাতিল এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপিসহ দেশের সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল। দলগুলোর ডাকা আজকের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো এবং সরকারের দলীয় সন্ত্রাসীরা অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিনা উসকানিতে প্রতিবাদী জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থানে গুলি, টিয়ারগ্যাস চালানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখে দেশ-বিদেশের জনগণ এ স্বৈরাচারী সরকারের অবৈধ ক্ষমতা জোর করে ধরে রাখার অপপ্রয়াস দেখে স্তম্ভিত হয়েছে। তাদের হামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মাথায় মারাত্মক রক্তক্ষরণ, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হওয়া হয়েছেন। এছাড়া অগণিত নেতাকর্মীকে নির্বিচারে গ্রেফতারের ঘটনা প্রমাণ করে ক্ষমতালোভী এ সরকারের হাতে দেশের কোনো নাগরিক নিরাপদ নন। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী এ সরকার আজ জনগণের শুধুই ঘৃণা ও ধিক্কার পাওয়ার যোগ্য।
আমরা জেনেছি যে, মাতুয়াইল ও শ্যামলীতে গাড়িতে আগুন দেওয়ার ও ভাঙচুর করার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। অথচ পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সুস্পষ্ট প্রমাণ দিয়ে খবর বেরিয়েছে, পুলিশের সামনেই এসব ঘটনা ঘটিয়ে ভিডিও করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চলে গেছে। কারা এটা করতে পারে তা অনুমানের জন্য বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেরা অপরাধ করে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিচ্ছি।
//এমটিকে