বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বাণিজ্য বাধা সত্ত্বেও সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে বাংলাদেশের রফতানি আয়ে দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে জানা গেছে, গত মাসে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪২৪ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের উৎপাদনশীলতা, প্রতিযোগিতামূলক বাজার কৌশল এবং বৈচিত্র্যময় রফতানি পণ্যের প্রমাণ বহন করে। চলমান বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষাপটে এটি দেশের অর্থনীতির জন্য এক আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত।
প্রধান চালিকা শক্তি: তৈরি পোশাক খাত
এখানে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে তৈরি পোশাক খাত (RMG), যা এককভাবে রফতানির প্রায় ৮১ শতাংশ জোগান দিয়েছে। মার্চে এই খাত থেকে এসেছে ৩৪৪ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি।
নিটওয়্যার রফতানি বেড়েছে ১২.৯৩% (১৮০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার)
ওভেন পোশাক বেড়েছে ১১.৮২% (১৬৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার)
অন্যান্য খাতেও ইতিবাচক প্রবণতা
হোম টেক্সটাইল: বেড়েছে ৩.৩০%, মোট আয় ৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য: প্রবৃদ্ধি ২২.৬৪%, আয় ৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার
তবে হোঁচট খেয়েছে কৃষিপণ্য খাত
একই সময় কৃষিপণ্যের রফতানিতে দেখা গেছে বড় ধরনের পতন। মার্চে আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশ কম।
আট মাসের পর্যালোচনায় উজ্জ্বল চিত্র
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত সময়ে মোট রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭১৯ কোটি ১৩ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। মোট ২৭টি পণ্য রফতানির তালিকায় রয়েছে, যার মধ্যে তৈরি পোশাক, ওষুধ এবং চামড়াজাত পণ্য উল্লেখযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতি সহায়তা ও প্রযুক্তি-নির্ভর উৎপাদনের কারণে বাংলাদেশ এই ধারা বজায় রাখতে পারলে আগামী অর্থবছরে আরও বড় সাফল্য ধরা দিতে পারে।