ঢাকায় আবু সাঈদের স্বরণ সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি কর্তৃক ২৮ বিজয়নগর, ঢাকার আঞ্চলিক পার্টি অফিসে আয়োজিত শহিদ আবু সাঈদের স্বরণ সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ মেহমান শহিদ আবু সাঈদের ভাই আবু হোসেনের উপস্থিতিতে পার্টির চেয়ারম্যান কে.এম আবু হানিফ হৃদয় বলেন, আবু সাঈদের রক্তের ওপর দিয়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত ও গণ-অভুত্থান সফল হয়েছে। এদেশকে আর ব্যর্থ হওয়া দেয়া যাবে না। শেখ হাসিনা সরকারও বুঝিনা, ইউনুস সরকারও বুঝিনা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে জনগণ সোচ্চার, প্রয়োজনে জুলাই-গণঅভুত্থ্যানের মতো আবার ঝাপিয়ে পড়বো।

আবু সাঈদের দাফনের দ্বিতীয় দিন জীবনের ঝুকি নিয়ে ঢাকা থেকে রংপুর আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও আন্দোলনকে উজ্জিবিত করতে পরিবারকে নগদ ১ লক্ষ টাকা অনুদানসহ নিজের দু’ছেলেকে তার বাবার কোলে তুলে দিয়েছিলাম, এক সন্তান চলে গেছে আরো দু’ সন্তান দিয়ে গেলাম। আজ তার দায় থেকে আবু সাঈদের স্বরণ সভা পালন করছি। জীবনের মায়া ত্যাগ করে জীবনের আয়ের সর্বোচ্চ অর্থ দিয়ে ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজপথে ছিলাম। স্বৈরাচার মুক্ত না হলে আজ গুম খুনের স্বীকার হতাম। আজ বিদেশ থেকে নির্দোষ ও উন্নয়নের গল্প শোনায়।

বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি মনে করে জনগণের ভোট চুরি ও বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে উন্নয়ন করাও একটা অপরাধ ছিল। শেখ হাসিনা তিনি যে বলেন, আমার অপরাধটা কোথায়? আমার বাবার ৩২ নম্বরের বাড়িটাও জ্বালিয়ে দিয়েছে আজ আমি ঘর ছাড়া। তিনি তার অপরাধ দেখেন না, আপনি কী ১৫৩ জন বিনাভোটের এমপি নিয়ে সংসদ গঠন করেন নাই। আপনি কী দিনের ভোট রাত্রে করেন নাই, আপনি কী বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ৬০ লক্ষ মামলা দেন নাই, খালেদা জিয়াকে সাধারণ মামলায় আটকিয়ে বিনা চিকিৎসায় হত্যার চেষ্টা করেন নাই। হেফাজদের আলেমদের শাপলা চত্বরে খুন করেন নাই, বিডিআর হত্যা চালিয়ে ৫৭জন অফিসার মারেন নাই।

আপনি কী আলেম ওলামাদের মিথ্যা মামলায় জেল খাটাননি, ডিবি হারুন ও বেনুজীরগংদের দিয়ে গুম খুন করাননি। বসুন্ধরাকে দিয়ে জমি দখল করাননি, সালমান এফ রহমান এস আলমকে দিয়ে দিয়ে ব্যবসার সিন্ডিকেট করেননি। বাংলার শ্রেষ্ঠ রাজাকার মোশারফকে মন্ত্রী ও বিয়াই বানাননি, বিএনপি-জামায়াতের অফিস তালা মারেননি। ছাত্রশিবির হলেই তাকে শেষ করে দিতে বলেননি, পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে দেশকে নির্যাতনের কারাগার বানাননি। আইন-আদালত আপনি নিয়ন্ত্রণ করেননি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে জেলে ডুকায়য়া দিমু বলেননি।

শধু তাই নয়. আপনি আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর জানাযার নামাজটাও ঢাকায় পড়তে দেননাই। ভূয়া স্বাক্ষী ধার করিয়ে জামায়াতের নেতাগুলো ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাত্রের অন্ধকারে কবর দিয়েছেন। ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আযহারীকে দেশ ছাড়া করেছেন। আল্লামা মামুনুল হক, ভিপি নুর, মান্না ভাই, চরমোনাই পীরসহ বহু প্রতিবাদী কন্ঠকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। হেফাজতের আমীর আল্লামা সফি আপনার রোষানলে পরে মরতে হয়েছে। আপনার নেতাকর্মীরা ২০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশ পাচার করেছে।

তারপরেও বলবেন আপনার অপরাধটা কোথায়? জুলাই-গণঅভুত্থানকে কেন্দ্র করে যে সূত্রপাত হয়েছে বা এখনো হচ্ছে তা আপনার পাপের প্রতিফলন। আপনার কারণে প্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের পা চাটা গোলামে পরিণত হয়েছে। আপনার কারনে দুই হাজার ছাত্র-জনতা-পুলিশ শহিদ ও নিহত হয়েছে। আর আপনি যে ইউনুস সরকার বা ছাত্রদের বিরুদ্ধে রেকর্ড ফাঁসে যে অভিযোগ দিচ্ছেন জনগণ ন্যায়-অন্যায় বিচার করে আবারও আবু সাঈদের মতো বুকে গুলি নেওয়ার মতো প্রস্তুত রয়েছেন।

অন্যায়কারী শাসক এদেশের জনগণ মানে নাই, ভবিষ্যতেও মানবে না। অন্তবর্তীকালীন সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি তা শতভাগ বিশ্বাস করে। এ সময় আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন ও শহিদের আত্মার মাগফেরাতে মোনাজাত করেন ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা এমদাদুল হক, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ