কুয়াকাটাকে হার মানাবে ছইলার চর

চারদিকে সবুজের সমারোহ, আকাশ আর নদীর মেলবন্ধন ছাড়াও আছে নজরকাড়া নয়নাভিরাম গাছ-গাছালি। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি থাকায় প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

ঝালকাঠির দক্ষিণে কাঁঠালিয়ার বিশখালি নদীর মাঝে জেগে ওঠা ছইলার চরে দেখা যায় এমন দৃশ্য। বিশখালি নদীতে একযুগ আগে জেগে ওঠে ৪১ একরের চরটি। যা বর্তমানে ৬১ একর। লক্ষাধিক ছইলা গাছ থাকায় এর নাম দেওয়া হয় ছইলার চর।

প্রথম দর্শনে মনে হবে কোনো সমুদ্রের তীরে এসেছেন। জায়গাটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে কুয়াকাটাকেও হার মানাবে। পড়ন্ত বিকেলে নতুন রূপে ধরা দিবে এখানকার প্রকৃতি। উপভোগ করা যায় পশ্চিম আকাশে সূর্য হেলে পড়ার দৃশ্যও।

এছাড়া গড়ে উঠেছে ডিসি ইকোপার্ক। পার্কের ভেতর চোখধাঁধানো লেক। তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার। শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্যও উত্তম জায়গা এটি।

বিপুল সম্ভাবনাময় ছইলার চর। এখানে নেই কোন হিংস্র প্রাণী । সহজ ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সারা বছর ধরেই ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় থাকে। এ চরকে কেন্দ্র করে কয়েকশ বেকার মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে।

ছইলা একটি লবণসহিষ্ণু বন্য প্রজাতির বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘Sonneratia caseoloris’। টকজাতীয় ছইলার ফল কাঁচা, পাকা ও রান্না করা অবস্থায় খাওয়া যায়। এই গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীরে প্রোথিত বলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে পড়ার ঝুঁকি নেই।

জোয়ারের সময় চরে পানি ঢুকে পড়লেও ভাটায় নেমে যায়। পাখির কিচিরমিচিরে সমাগম পুরো ছইলার চর। লাখো ছইলা গাছে দেখা মিলে পাখিরা নীড়। শালিক, টিয়া, চড়ই আর বকের মেলা। ছইলা ছাড়াও এখানে হোগল, কেয়া, এলি, রানা, মাদার, আরগুজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছে ঘেরা।

প্রতিবছর শীতের সময় পর্যটকদের ভীড়ে মুখরিত থাকে স্থানটি। দূরদূরান্ত থেকে এ মৌসুমে ছুটে আসে পিকনিকের দল। কিন্তু এখানে আসার সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। ট্রলার বা নৌকা ছাড়া আসার উপায় নেই। তৈরি করা হয়নি ঘাট।

যারা ছইলার চর যেতে চান তাদের প্রথমে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ঝালকাঠির দক্ষিণে কাঁঠালিয়ার বন্দরে যেতে হবে। এরপর কাঁঠালিয়া বন্দরে নেমে নৌকা অথবা ট্রলারে করে পৌঁছে যাবেন বঙ্গোপসাগর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের এই ছইলার চরে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ