সাঈদী ছিলেন কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন : জামায়াত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে রাতেই দলীয়ভাবে এক বিবৃতিতে শোক জানায় দলটি।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দের সই করা শোক বার্তায় ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান সাঈদীকে বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মহান রাব্বি কারিমের ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার সফর শেষ করে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ছিলেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। আল্লামা সাঈদী অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় কুরআনের খিদমত করেছেন। বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের তাফসিরের জন্য। তার তাফসির শুনে বহু অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে তিনি কুরআনের মাহফিল করে মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তার এই গোলামকে ক্ষমা করুন, তার ওপর রহম করুন এবং তাকে সম্মানিত করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উঁচু মাকাম দান করুন। আল্লাহ পাক তার এ মৃত্যুকে শহীদি মৃত্যু হিসেবে কবুল করুন। তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব পর্যায়ের সহকর্মীদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সবরে জামিল দান করুন। তার জানাজা ও দাফনের সময় শিগগিরই জানানো হবে।

এর আগে, সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তারও আগে, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুকে ব্যথাজনিত সমস্যার কারণে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তার ইসিজিসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। রোববার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় সাইদীকে।

২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় সাঈদীকে। পরে ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এতদিন ওই সাজা ভোগ করছিলেন তিনি।

//এমটিকে

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ