গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যা কিছু ভুলত্রুটি তা সংশোধন করে সবার সহযোগিতা নিয়ে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য গণমাধ্যমের সহায়তা প্রয়োজন। আমাদের ভুলত্রুটি অবশ্যই ধরিয়ে দেবেন, কিন্তু অর্জনগুলো যেভাবে প্রচার হওয়ার দরকার সেভাবে উপস্থাপনের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি নিবেদন রইল।’
রাজধানীতে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ হলে বুধবার সন্ধ্যায় তথ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আগত পত্রিকা সম্পাদক, টিভি চ্যানেলের বার্তা সম্পাদক, সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যমব্যক্তিত্বদের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। গণমাধ্যম সমাজকে সঠিক চিন্তা করতে সহায়তা করতে পারে, করে। গণমাধ্যম সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করে, করতে পারে। আবার গণমাধ্যম যদি চেষ্টা করে সমাজকে ভুল বার্তাও দিতে পারে। আমরা চাই অবশ্যই আমাদের ভুলত্রুটি আপনারা তুলে ধরবেন। একইসাথে আজকে যে দেশটা বদলে গেল, এই বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে পৃথিবীময় যুদ্ধাবস্থায় বিশ্বমন্দার মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট যে দেশের প্রশংসা করে, সেটি অনেক সময় বড় আকারে পত্রিকায় আসে না। কিন্তু কেউ একজন নেতিবাচক কথা বললে দেখা যায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় আকারে পত্রিকায় আসে কিম্বা টেলিভিশনে উপস্থাপিত হয়। আমরা এই ক্ষেত্রে আপনাদের সহায়তা চাই।
সরকারের ভুলত্রুটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন সরকার দাবি করতে পারবে না অতীতে শতভাগ নির্ভুল কাজ করেছে কিম্বা ভবিষ্যতে করবে। আমাদের অবশ্যই ভুলত্রুটি আছে, কিন্তু সেই ভুলগুলোকে যদি অনেক বড় করে আর অর্জনগুলোকে যদি ছোট করে দেখানো হয়, তাহলে সমাজের সঠিক চিত্র পরিষ্ফুটিত হয় না। ১৪ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন এবং তার ফলে আজকে বাংলাদেশ একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকে ছাড়িয়েছে।
ড. হাছান বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের সহায়তা চাই কারণ গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণমাধ্যমের সহায়তা ছাড়া বহুমাত্রিক, গণতান্ত্রিক, বিতর্ক এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার ভিত গভীরে প্রোথিত হয় না। একটি কথা নিশ্চয়ই সবাই স্বীকার করবেন- এই দেশে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি চেতনার মূর্ত প্রতীক হচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এই দেশে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালির চেতনা-সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশে তার কোনো বিকল্প নেই। দেশে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির যদি ক্ষয় হয়, তাহলে কারা জায়গা করে নেবে সেটি আমাদের ভাবনায় রাখা প্রয়োজন।’
গণমাধ্যমের বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বহুমুখী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ২০০৯ সালে সাড়ে চারশ’ পত্রিকা ছিল এখন সাড়ে বারোশ’। ১০টি টেলিভিশন ছিল, এখন ৩৮টি সম্প্রচারে আছে, আরো কয়েকটি সম্প্রচারে আসার কথা। অনলাইন গণমাধ্যমের এক্সপোনেন্সিয়াল গ্রোথ হয়েছে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন যেখান থেকে আমরা সাংবাদিকদের পাশাপাশি অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদেরও বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, রমেশ চন্দ্র সেন, শাজাহান খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজের বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সুভাষ সিংহ রায়, ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার সভাপতি রেজওয়ানুল হক রাজা, বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস প্রমুখ।
গণমাধ্যমব্যক্তিত্বদের মধ্যে অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, কালবেলার উপদেষ্টা সম্পাদক আবেদ খান, সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, কালের কণ্ঠ সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, গ্লোবাল টিভির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ডিবিসি নিউজ টিভির প্রধান নির্বাহী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরী, একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, বাংলাভিশনের প্রধান সম্পাদক ড. আবদুল হাই সিদ্দিক, নেক্সাস টিভির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, গ্লোব জনকন্ঠ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী জিনাত জেরিন আলতাফ, কবি ড. তারিক সুজাত, লেখক আনিসুল হক, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মহাপরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, বাংলাদেশ পোস্ট সম্পাদক শরিফ শাহাবুদ্দীন, এশিয়ান এজ সম্পাদক ড. জেসমিন চৌধুরী, বাংলাদেশ টুডে সম্পাদক মোঃ জোবায়ের আলম, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, সংবাদ সারাবেলা সম্পাদক আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ সমাচার সম্পাদক ড. খান আসাদুজ্জামান, আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, ডেইলি ইন্ডাস্ট্রি সম্পাদক ড. এনায়েত করিম প্রমুখ। বিবিসি বাংলা থেকে যোগ দেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং কাদির কল্লোল।
অনলাইন গণমাধ্যমের মধ্যে যোগ দেন বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, বাংলানিউজ সম্পাদক জুয়েল মাজহার, জাগোনিউজ সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক, বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, সারাবাংলাডটনেট সম্পাদক বদরুল আলম খান, ঢাকা প্রকাশের প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামাল প্রমুখ।