মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সফল মতবিনিময় বৈঠক অনুষ্ঠিত

আজ ২০ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীকের আমন্ত্রণে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ তাঁর দপ্তরে এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদের নেতৃত্ব এ বৈঠকে সংগঠনের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হাশেম আলী, ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জুলকারনাইন ডালিম, ভাইস চেয়ারম্যান লেখক গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ খলিফা, অর্থসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রমিজউদ্দিন আহমদ।

বৈঠকের শুরুতে এমুস চেয়ারম্যান আবীর আহাদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতা সৈয়দ মজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, মনসুর আলী, এএইচ এম কামরুজ্জামান এবং মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৩০ লক্ষ শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বশীল কেউ কেউ যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, বেদনাবিধূর ১৫ আগস্ট ও ৪ঠা নভেম্বর সংবিধান দিবস নিয়ে নেতিবাচক উক্তি করেন, তখন মুক্তিযোদ্ধা হিশেবে সেই সরকারের প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে বসে কথা বলতে আমরা বেশ অস্বস্তি ও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ি। তবুও জাতীয় স্বার্থে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা মহোদয়ের আন্তরিকতা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও তাঁদের দুঃখ-বেদনার কথা তুলে ধরার জন্যে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিধায় আমরা তাঁর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছি।

অতঃপর এমুস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান, বঙ্গবন্ধু সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার আলোকে বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমিশনের নেতত্বে মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণ, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধা উচ্ছেদ, জামুকা বাতিল, মুক্তিযোদ্ধা কোটা যৌক্তিক পর্যায়ে পুনর্বহাল, মাসিক ভাতা বৃদ্ধি ও মাসিক চিকিৎসা ভাতার প্রচলন, ২৫ লক্ষ টাকার গৃহঋণ প্রদান, শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকেও বিজয় ও নববর্ষ দিরস ভাতা প্রদান ও মুক্তিযোদ্ধা সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিসম্বলিত ৯ দফা দাবির একটা স্মারকলিপি পড়ে শোনান এবং সেটি উপদেষ্টা মহোদয়ের হাতে অর্পণ করেন। এসময় এমুস নেতৃবৃন্দ কোন কোন তালিকায় বেশি পরিমাণে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে সেটি উল্লেখ করে, তাদেরকে কোন প্রক্রিয়ায় উচ্ছেদ ও শাস্তির আওতায় আনা যায়, সেসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ পেশ করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক ই আজম অত্যন্ত ধৈর্য ও আন্তরিকতার সাথে এমুসের বক্তব্য শোনেন। অতঃপর তিনি বলেন যে, মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে তিনি এমুসের এতদসংক্রান্ত বক্তব্য সংবিধান সংস্কার কমিশনে সুপারিশ করে পাঠাবেন এবং বিষয়দ্বয় সংবিধানভুক্ত করাসহ অন্যান্য বিষয়বলির সমাধানের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও ভুয়াদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে তাঁকে-দেয়া একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহযোগিতার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরে চা-চক্রের মাধ্যমে বৈঠকটি সমাপ্ত হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ