বিএনপির জন্ম না হলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসত না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, বিএনপির জন্ম না হলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসত না। ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে দেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, আইনের সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তা থেকে উত্তরণের জন্যই বিএনপির জন্ম হয়েছে। বিএনপির জন্মের পরেই বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ কৃষক, শ্রমিক, জনতা আশা দেখেছিল।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বল্পকালীন দেশ পরিচালনার পরে এদেশে স্বৈরাচার ফিরে আসে। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার পাঁয়তারা করেছে স্বৈরাচারী এরশাদ। পরবর্তী সময়ে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির হাল ধরে দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) নারীদের উন্নয়ন করেছেন, কৃষিতে উন্নয়ন করেছেন। দেশের সব সেক্টরেই তিনি উন্নয়ন করেছেন। তাকেও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার নানান মিথ্যা মামলায় জর্জরিত করে দীর্ঘ ছয় বছর বন্দি করে রেখেছিল।
দুদু বলেন, তারেক রহমান এখনো দেশের বাইরে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করা দরকার। খালেদার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোও প্রত্যাহার করা দরকার। বিএনপির মহাসচিবসহ বিরোধীদলগুলোর নেতাকর্মী যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন তাদের মামলা এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। ৬০ লাখ আসামি আড়াই লাখ মামলা যতক্ষণ না প্রত্যাহার করা না হবে ততক্ষণ প্রশ্ন থেকেই যাবে যে এই সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ শুরু করেছে কি না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, এ সরকার আমাদের ভালবাসার সরকার, এ সরকারকে আমরা সমর্থন করি। এই সরকার ছাত্র-জনতার সরকার। এই সরকার জুলুমবাজদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। হাসিনা নেই তার করা মামলা থাকবে কেন? কোর্ট কাছারি তো এখন মুক্ত। এই বিষয়গুলো এ সরকারকে ভাবতে হবে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে তার অবস্থা তৈরি করে নির্বাচন দেওয়া। সেই নির্বাচনে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাব। আর বিএনপি জনগণের দল হিসেবে আগামীতে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করতে চায় বলেই ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলেছে। এর থেকে বড় সংস্কার বাংলাদেশে আপাতত আর কেউ দিতে পারেনি।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষকদল নেতা সাদি, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজি প্রমুখ।