অবৈধ সরকারকে রক্ষায় ভারত ব্যস্ত হয়ে পরেছে: দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারকে রক্ষা করার জন্য ভারত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাতজন র‍্যাব কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছিল মানবাধিকারের জন্য। আমাদের পার্শ্ববর্তী বন্ধু রাষ্ট্র ভারত দেশের জনগণের পক্ষে থাকলে কোনো কথা নাই। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, তারা নিশি রাতের অবৈধ সরকার শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটা ভালো বিষয় নয়।

মঙ্গলবার (২০ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে ভয়ংকর ও ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে, যে কারণে মুক্তি যুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশের জনগণ এক সাগর রক্ত দিয়েছে, লাখ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তাদেরকে অসম্মান করা হবে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারলেই এই সংকট কেটে যাবে।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশবাসী কখনো স্বৈরশাসক, কর্তৃত্ববাদী শাসকের কাছে মাথা নত করবে না। পাকিস্তান আমলেও করে নাই। বাংলাদেশ আমলেও করে নাই, ভবিষ্যতেও করবে না।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, এমন কোনো জিনিস নাই, যার দাম সরকার ৩/৪ গুণ বাড়ায়নি। শুধু তাই নয়, যারা জাতিসংঘ শান্তি মিশনে আছেন, তাদেরও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

দুদু ব‌লেন, মানুষ আজ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। নিশি রাতের সরকার ও নিশি রাতের ভোট এদেশের মানুষ আর চায় না। আগামীতে যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া না হয়, আর যদি অস্থিতিশীল কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে এর দায়ভার এই আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।

১০ মিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ব‌লেন, নতুন করে বিদ্যুতের সংকট দেখা দিয়েছে। আপনি সারের দাম বাড়িয়েছেন। আপনি ১৮ লাখ হাজার কোটি টাকা তছরুপ করেছেন। সেই টাকাগুলো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। আপনার দলের লোকজনের কাছে অনেক অস্ত্র আছে, এই অস্ত্রগুলো আপনি ক্লোজ করার ব্যবস্থা করেন। আপনি ১০ মিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু আরও ব‌লে‌ন, বেগম জিয়াকে মুক্তি দেন। তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সহযোগিতা করুন। পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। আর তা যদি না করেন, তাহলে যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন, সম্মান নিয়ে বিদায় নিতে পারবেন না। এটা যদি আপনার মাথায় না আসে, তাহলে আপনার জন্য অসম্মানজনক পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।

দাবি-দাওয়ার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা ব‌লেন, আমাদের দাবি হলো বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে দেশে আসতে দিতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এই দেশবাসী কখনো স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে ছিল না।

এসময় তিনি স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সবাইকে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার আহ্বান জানান।

জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- তাঁতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনির, কৃষকদলের সহ-সভাপতি ভিপি ইব্রাহিম, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম চৌধুরী, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন সরদার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ