বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশের সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে নিয়ে একটি সম্প্রীতির সমাজ নির্মাণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তার এই বক্তব্য শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার অংশমাত্র নয়, বরং এটি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ ও বহুত্ববাদী বাংলাদেশের প্রতি এক দৃঢ় বার্তা।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে হানাহানি, বিদ্বেষ, বিভেদ থাকবে না। আমরা চাই সবাই যেন পরস্পরের বক্তব্যকে শ্রদ্ধা করে, সহনশীলতা চর্চা করে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই আমাদের ঐতিহ্য, এবং তা বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার এই বক্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভক্তি, সামাজিক বিভাজন ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সামরিক বাহিনীর এমন অবস্থান একটি নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ ভূমিকা রাখার ইঙ্গিত দেয়।
সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা সব ধর্মের সঙ্গে জড়িত, কারণ আমরা এই দেশেরই মানুষ। বাংলাদেশ কারও একার না, এটা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সবার দেশ। এই চেতনা নিয়েই আমরা কাজ করি, চলি।”
তিনি আরও বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থিতিশীলতা আনতে যা কিছু প্রয়োজন, তা আমরা করব। শুধু সেখানে নয়, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য।”
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য নিরাপত্তা বাহিনীর সামাজিক সংহতির প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। সেইসঙ্গে, এটি রাষ্ট্রের একীকরণে সহনশীলতা ও বহুত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিও সমর্থনের বার্তা।
এই অনুষ্ঠান ও বক্তব্য বাংলাদেশের নিরাপত্তা কাঠামোর সামাজিক চরিত্র, আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির রক্ষণাবেক্ষণ এবং শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।