আলু খোসাসহ খাব, নাকি খোসা ছাড়া? আলুর খোসার কি আদৌ কোনো পুষ্টিগুণ আছে? আছে আছে, আলুর খোসারও রয়েছে অনন্য, অসাধারণ পুষ্টিগুণ। যেই আলুর খোসা আমরা ‘সযত্নে’ ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিই, আজ জেনে নেওয়া যাক, তার উপকারিতা সম্পর্কে।
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
আলুর খোসায় রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস ও ফাইবার, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পেশি ও স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
২. কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকর
আলুর খোসা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবারের চমৎকার উৎস। দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আর অদ্রবণীয় ফাইবার হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকর।
৩. ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে
এতে রয়েছে ফ্লাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড এবং ফিনোলিক যৌগ, এগুলো সব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এগুলো শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলস দূর করে হার্টের রোগ, ক্যানসার এবং স্নায়ুজনিত রোগের ঝুঁকি কমায়।
৪. প্রদাহ কমায়
আলুর খোসায় থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড প্রদাহবিরোধী গুণসম্পন্ন, যা আর্থ্রাইটিসের মতো প্রদাহজনিত রোগের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।
৫. হজমশক্তি ও মাইক্রোবায়োমের উন্নতি ঘটায়
আলুর খোসার ফাইবার পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। প্রোবায়োটিকের মতো উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি জোগায়। মাইক্রোবায়োম রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। খাদ্যের জটিল উপাদান ভেঙে সহজপাচ্য করে।
৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে
আলুর খোসার ফাইবার পেট ভরা রাখে, যা খাবারের প্রতি আগ্রহ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এর রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং জমাট বাঁধা চর্বি কমাতে ভূমিকা রাখে।
৭. হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে এবং হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তনালির কার্যকারিতা উন্নত করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়।
৮. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে
আলুর খোসায় থাকা ফাইবার রক্তপ্রবাহে গ্লুকোজের শোষণ ধীর করে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এটি বিশেষ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী।
৯. ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
আলুর খোসায় থাকা ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিন সি ত্বককে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে। আলুর খোসা আর্দ্রতা বজায় রাখে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
এ ছাড়া আলুর বেশির ভাগ পুষ্টি থাকে খোসার ঠিক নিচে। তাই খোসা যদি না-ও খান, অন্তত খোসাসহ আলু রান্না করে তারপর আলু ছাড়িয়ে নিয়ে খান।
এবার আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিন, আলু খোসাসহ খাবেন, নাকি খোসা ছাড়া।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া