আইপিএল: মেগা নিলাম শেষে শক্তিমত্তায় এগিয়ে কারা, দুর্বলতা কোথায়

আইপিএলের মেগা নিলামের আগে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজি মিলে ৪৬ ক্রিকেটার ধরে রেখেছিল। সৌদি আরবের জেদ্দায় দুই দিনের মেগা নিলাম থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কিনেছে আরও ১৮২ ক্রিকেটার। খেলোয়াড় হাঁকডাকের এই আয়োজনে এবার খরচ হয়েছে ৬৩৯ কোটি ১৫ লাখ রুপি।

পছন্দ অনুযায়ী খেলোয়াড় কিনতে পারায় বেশির ভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকই খুশি। তবে দলে কিছু ঘাটতিও রয়ে গেছে। নিলাম শেষে ১০ দল কেমন হলো, তা এরই মধ্যে জেনে গেছেন। তবে শক্তিমত্তায় এগিয়ে কোন দল, কোন দলের দুর্বলতা কোথায়, তা নিয়ে এখনো সেভাবে পর্যালোচনা করা হয়নি।

স্কোয়াড অনুযায়ী শক্তিমত্তা-দুর্বলতার ভিত্তিতে দলগুলোর রেটিং করা হলো—

গুজরাট টাইটানস
১০/১০

শক্তিমত্তা

পেস আক্রমণ: অভিজ্ঞ কাগিসো রাবাদা, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ সিরাজদের সঙ্গে জেরাল্ড কোয়েটজি, প্রসিধ কৃষ্ণা ও আরশাদ খান।

স্পিন বিভাগ: রশিদ খানের সঙ্গে দারুণ ছন্দে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দর। আছেন ঘরোয়ায় পরীক্ষিত স্পিনার সাই কিশোর।

উদ্বোধনী জুটি: শুবমান গিলের সঙ্গে আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা জস বাটলার।

ফিনিশিংয়েও দুর্দান্ত: শেরফান রাদারফোর্ডের সঙ্গে দুই ভারতীয় রাহুল তেওয়াতিয়া ও শাহরুখ খান।

দুর্বলতা

নেই বললেই চলে।

পাঞ্জাব কিংস
৯/১০

শক্তিমত্তা

পরীক্ষিত অধিনায়ক: দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে শ্রেয়াস আইয়ারের। গত মৌসুমে তাঁর অধিনায়কত্বে কলকাতা শিরোপা জিতেছিল। এবার তাঁকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দিতে পারে পাঞ্জাব।

অভিজ্ঞদের পেছনে ব্যয়: আইপিএলে অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিতদের কিনতে প্রচুর টাকা ঢেলেছে। তাঁরা আস্থার প্রতিদান দিতে চাইবেন।

নির্ভরযোগ্য ভারতীয় খেলোয়াড়: শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে অর্শদীপ সিং, যুজবেন্দ্র চাহাল, শশাঙ্ক সিং, বিজয়কুমার বৈশাখ।

অলরাউন্ডারে পরিপূর্ণ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, মার্কাস স্টয়নিস, মার্কো ইয়ানসেন।

তরুণ প্রতিভা: প্রভসিমরান সিং, মুশির খান, প্রিয়াংশ আর্য।

দুর্বলতা

বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ানদের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা।

মুম্বাই ইন্ডিয়ানস
৯/১০

শক্তিমত্তা

ভারতের ‘বিগ ফাইভ’: বর্তমান অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া, সাবেক রোহিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তারকা ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা এবং আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের দুজন তিলক বর্মা ও সূর্যকুমার যাদব।

বৈচিত্র্যময় স্পিন আক্রমণ: বাঁহাতি মিচেল স্যান্টনার, লেগ স্পিনার কর্ণ শর্মা, রহস্য বোলার আল্লাহ গজনফর।

পেস আক্রমণ: যশপ্রীত বুমরা ও ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে হার্দিক পান্ডিয়া, দীপক চাহার, রিস টপলি, লিজাড উইলিয়ামস।

এক্স-ফ্যাক্টর: তরুণ নমন ধীর ও উইল জ্যাকস।

দুর্বলতা

হার্দিক পান্ডিয়া ছাড়া কোনো ফিনিশার নেই।

দিল্লি ক্যাপিটালস
৮.৫/১০

শক্তিমত্তা

নেতৃত্বগুণ: ফাফ ডু প্লেসি ও লোকেশ রাহুল।

নির্ভরযোগ্য বিদেশি খেলোয়াড়: ডু প্লেসির সঙ্গে জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্ক, মিচেল স্টার্ক, ট্রিস্টান স্টাবস, হ্যারি ব্রুক, দুষ্মন্ত চামিরা, ডোনোভান ফেরেইরা।

বিকল্প খেলোয়াড়: মোহিত শর্মা, সামির রিজভি, করুণ নায়ার।

পরীক্ষিত ভারতীয় বোলার: অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, থাঙ্গারাসু নটরাজন, মুকেশ কুমার।

তরুণ প্রতিভা: স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার বিপ্রজ নিগম।

দুর্বলতা

নির্ভরযোগ্য কোনো ফিনিশার নেই।

কলকাতা নাইট রাইডার্স
৮.৫/১০

শক্তিমত্তা

সব বিভাগেই পরীক্ষিত খেলোয়াড় আছে।

অসাধারণ স্পিন আক্রমণ: সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী, মায়াঙ্ক মারকান্ডে।

অলরাউন্ডারে টইটম্বুর: সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, মঈন আলী, রমনদীপ সিং, ভেঙ্কটেশ আইয়ার।

টপ অর্ডারে শক্তি বাড়ানো: কুইন্টন ডি কক, অংকৃশ রঘুবংশী।

ভারতের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফেরানো: অজিঙ্কা রাহানে, মনীশ পান্ডে।

নিখাদ গতি: উমরান মালিক, আনরিখ নর্কিয়া, হর্ষিত রানা।

দুর্বলতা

অধিনায়ক কে হবেন, তা নিয়ে আছে দ্বিধা। স্কোয়াডে এমন কেউ নেই, যাঁর আইপিএলে অন্তত এক মৌসুম অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা আছে।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
৭.৫/১০

শক্তিমত্তা

নতুনত্ব: দলটা পুনর্গঠন করা হলেও বেশ ভালো।

বিপজ্জনক টপ অর্ডার: ফিল সল্ট, বিরাট কোহলি, রজত পতিদার, জ্যাকব বেথেল।

মিডল অর্ডারে হার্ড হিটারের আধিক্য: লিয়াম লিভিংস্টোন, জিতেশ শর্মা, ক্রুনাল পান্ডিয়া।

অভিজ্ঞ পেস আক্রমণ: জশ হ্যাজলউড, ভুবনেশ্বর কুমার।

তরুণ প্রতিভা: যশ দয়াল, রাসিখ সালাম।

দুর্বলতা

বিশ্বমানের স্পিনার নেই: সুয়াশ শর্মা, স্বপ্নিল সিং।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
৭/১০

শক্তিমত্তা

বিস্ফোরক টপ অর্ডার: ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, ঈশান কিষান।

মিডল অর্ডারও বিপজ্জনক: হাইনরিখ ক্লাসেন, নীতীশ রেড্ডি, অভিনব মনোহর।
পরীক্ষিত দুই লেগ স্পিনার: অ্যাডাম জাম্পা, রাহুল চাহার।

বিকল্প পেসার: মোহাম্মদ শামি ও হর্শাল প্যাটেলের সঙ্গী হতে পারেন জয়দেব উনাদকাট ও সিমারজিত সিং।

দুর্বলতা

অভিজ্ঞ দুই পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও থাঙ্গারাসু নটরাজনকে ধরে না রাখা।

মিডল অর্ডার ও লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাকআপ নেই।

চেন্নাই সুপার কিংস
৭/১০

শক্তিমত্তা

সব বিভাগেই কার্যকর খেলোয়াড় আছে।

দুর্দান্ত স্পিন আক্রমণ: রবীন্দ্র জাদেজা ও নুর আহমেদ। ফেরানো হয়েছে ‘চেন্নাইয়ের সন্তান’ রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে।

অতীতে যাঁদের নিয়ে শিরোপা জিতেছে, তাঁদের অনেককেই ফেরানো হয়েছে।

তরুণ প্রতিভা: ব্যাটসম্যান আন্দ্রে সিদ্ধার্থ, পেসার অংশুল কাম্বোজ, পেসার গুরজপনিত সিং, হার্ড হিটিং অলরাউন্ডার রামকৃষ্ণ ঘোষ।

পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য ভারতীয়: বিজয় শংকর, রাহুল ত্রিপাঠী, দীপক হুদা, শ্রেয়াস গোপাল।

দুর্বলতা

ফিনিশিংয়ের সেই মহেন্দ্র সিং ধোনির ওপরই অতিমাত্রায় নির্ভরতা।

রাজস্থান রয়্যালস
৬.৫/১০

শক্তিমত্তা

ধরে রাখা খেলোয়াড়দের সবাই টপ পারফর্মার: সঞ্জু স্যামসন, যশস্বী জয়সোয়াল, ধ্রুব জুরেল, শিমরন হেটমায়ার, রিয়ান পরাগ, সন্দীপ শর্মা।

বিস্ফোরক টপ ও মিডল অর্ডার: স্যামসন, জয়সোয়াল, পরাগ, হেটমায়ার।

দুর্বলতা

স্পিন আক্রমণ বিদেশিনির্ভর: ওয়াননিন্দু হাসারাঙ্গা, মহীশ তিকশানা।

পেস আক্রমণে ভারতের পরীক্ষিত কেউ নেই।

ফিনিশিংয়ে ঘাটতি।

লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস
৬/১০

শক্তিমত্তা

একই দলে দুই বিস্ফোরক উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান: ঋষভ পন্ত, নিকোলাস পুরান।

ব্যাটিং বিভাগ বিশ্বমানের: পন্ত-পুরান ছাড়াও আছেন মিচেল মার্শ, এইডেন মার্করাম ও ডেভিড মিলার।

অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার: মার্শ ও মিলার।

নির্ভরযোগ্য ভারতীয় পেসার: মায়াঙ্ক যাদব, আবেশ খান, আকাশ দীপ।

দুর্বলতা

উদ্বোধনী জুটি পরীক্ষিত নয়: কুইন্টন ডি কক, লোকেশ রাহুলরা চলে যাওয়ায় ওপেন করতে পারেন এইডেন মার্করাম ও অনভিজ্ঞ ম্যাথু ব্রিটজকে।

বিদেশি পেসারের সংকট: শামার জোসেফ ছাড়া বিদেশি পেসার নেই। জোসেফও খুব একটা অভিজ্ঞ নন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ