নরসিংদীতে ছাত্রদলের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৪

নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের নাহিদ ও জাপ্পি গ্রুপের সংঘর্ষে হয়। এতে ১৪ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে নরসিংদীর চিনিশপুর এলাকায় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের প্রথম দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে রাত ১০টার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতলে দ্বিতীয় তলায় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক ইউসুফ। স্থানীয়রা জানান, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক জাহিদ হাসান এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেন এবং অপরপক্ষের নেতৃত্বে দেন নরসিংদী জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ।

আহতরা হলেন- ব্রাহ্মন্দী এলাকার জাকিরের ছেলে জাহিদ হাসান জাপ্পি (২৮), একই এলাকারের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), পৌর শহরের বাশাইল এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে মিনহাজুর রহমান, চিনিশপুরের ছানা উল্লাহর ছেলে তৌফিক (২৭), দাসপাড়ার ডালিম মিয়ার ছেলে রিপন (২২), সদরের আলোকবালি এলাকার ফুরকান মিয়ার ছেলে দুলাল (২৫), সংগীতার নাসিরুদ্দিনের ছেলে জীবন (২০), নজরুল ইসলামের ছেলে জাহিদ বিন রাফি (২২), আবুল কাশেমের ছেলে অয়ন, বাবুল মিয়ার ছেলে শিমুল ( ২৮), দাসপাড়ার দানিশ মিয়ার ছেলে শিপন (২৫), সাহে প্রতাপের খোরশেদের ছেলে সানভির আলম নিবিড় (২৫) অপরদিকে নাহিদ গ্রুপের সদস্যদের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আহতরা অভিযোগ করে বলেন, বিকেলে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে চেয়ারে বসা নিয়ে প্রথমে সংঘর্ষ হয়। নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক জাহিদ হাসান গ্রুপের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে নরসিংদী জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ গ্রুপের কর্মীরা। এ সময় দু’গ্রুপের মধ্যে শুরুতে ধস্তাধস্তি ও পরে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে জাহিদ গ্রুপের অন্তত ১৪ জন আহত হন। পরে আহতরা নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতালে ঢুকে দ্বিতীয় দফায় আহতদের ওপর নাহিদ গ্রুপের কর্মীরা আক্রমণ চালান। এ সময় আহতদের মধ্য থেকে আরও ৩ জনকে কুপিয়ে এবং হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে ভাঙচুর করে চলে যায় নাহিদ গ্রুপের লোকজন। ঘটনার খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে যান মডেল থানা পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দলীয় কার্যালয়ে চেয়ারে বসা নিয়ে তর্কের সূত্রপাত। এরপর ঘটনাটি মারামারিতে রূপ নেয়। সেখানে একদফা মারামারির পর দলীয় সিনিয়র নেতারা ঘটনার সমাধান করে দু’গ্রুপকে মিলিয়ে দেয়। এরপর আহতরা নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে প্রবেশ করলে নাহিদ গ্রুপ জাহিদ গ্রুপের ওপর হামলা করে।আহত জাহিদ হাসান বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি জুলাইয়ে। আমরা সাধারণ ছাত্র। আমাদের ওপর নাহিদের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। প্রথম দফা হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসার পর দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালে এসে হামলা করেছে ওরা।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তৌহিদুল আলম বলেন, ১০ জন জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে হাসপাতালের ভেতরেও ৩ জনকে কোপানো হয়েছে। আরও ৪-৫ জন আহত থাকলেও হাসপাতালে হামলার পর তারা পালিয়ে যায় আতঙ্কে। হামলার সময় হাসপাতালেও ভাঙচুর করা হয়। এদিকে নাহিদ গ্রুপের প্রধান সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ বলেন, জাহিদের লোকজন আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে চাচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ওদের হামলায় উল্টো আমিসহ বেশ কিছু লোক আহত হয়েছি। এ বিষয়ে নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক ইউসুফ বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে আহতদের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ