মুরালিধরনের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে না, কারণ ব্যাখ্যা করলেন নিজেই

লাল বল হাতে মুত্তিয়া মুরালিধরনকে দেখা গেছে ১৪ বছর আগে। ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২০১০ সালের জুলাইয়ে বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার এই কিংবদন্তি। দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকলেও এখন পর্যন্ত নিজের দখল করা সিংহাসনে বহাল তবিয়তেই আছেন লঙ্কান স্পিনার।

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মুরালিধরন ১৩৩ ম্যাচে শিকার দখল করেছেন ৮০০ উইকেট। তিনি মাঠ থেকে বিদায়ের নেওয়ার পর গেলো ১৪ বছরে বহু রাজা টেস্ট ক্রিকেটে এসেছেন। কিন্তু যে সিংহাসনে ‘৮০০ উইকেট’ লেখা খচিত আছে, সেই সিংহাসনের আশেপাশেও যেতে পারেননি কেউ। এমনকি অদূর ভবিষ্যতেও ৮০০ উইকেটের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবেন না বলে মনে করেন মুরালি নিজেই।

টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি শেন ওয়ার্ন খেলা ছেড়েছেন ২০০৭ সালে। অস্ট্রেলিয়ান এই কিংবদন্তি স্পিনারের দখলে ছিল ৭০৮ উইকেট। আর ৭০৪ উইকেট নিয়ে তৃতীয়স্থানে থাকা ইংল্যান্ড পেসার জেমস অ্যান্ডারসন অবসর নিয়েছেন সম্প্রতি।

বর্তমানে টেস্ট খেলছেন এমন কেউ মুরালির আশেপাশে নেই। অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লায়নের ৫৩০ উইকেট থাকলেও ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে চলে এসেছেন। কারণ, লায়নের বয়স এখন ৩৬। হয়তো আর বেশিদিন খেলতে পারবেন তিনি।

ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দখলে আছে ৫১৬ উইকেট। ক’দিন পর ৩৭ বছর বয়সী তারকা স্পিনারকেও যেতে হবে অবসরে। ৩০ বছরের কম, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদার, ২৯৯টি। তার পক্ষেও মুরালিধরনকে স্পর্শ করা অসম্ভবই বলা যায়।

কেন ৮০০ উইকেটের রেকর্ড ভাঙা সম্ভব নয়, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মুরালিধরন। তিনি মনে করেন, বর্তমানে দলগুলো টেস্ট ক্রিকেট খুব কম খেলে। সবার আগ্রহ সংক্ষিপ্ত ক্রিকেটে (টি-টোয়েন্টি ও টি-টেন)। এত কম টেস্ট খেলে রেকর্ড ভাঙা সম্ভব না।

ইংরেজি সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেইল’কে মুরালি বলেন, ‘আমি অবশ্যই টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে চিন্তিত। প্রতিটি দেশ (বছরে) মাত্র ৬-৭ টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ খেলতে পারে। কিন্তু অন্য কিছু দেশের মানুষ ট্স্টে খেলা দেখছে না। (আগামীতে) খুব কম টেস্ট ক্রিকেট হবে।’

রেকর্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা খুব কঠিন (৮০০ টেস্ট উইকেট অতিক্রম করা)। কারণ, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সংক্ষিপ্ত ফর্মের ক্রিকেটে। এছাড়া আমরা ২০ বছর ধরে খেলেছি। ক্যারিয়ার এখন ছোট।’

‘ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই বড় সমস্যা। তারা কতটা ভালো খেলছে, তা নিয়ে সমস্যা নয়। কারণ তারা সবাই প্রতিভাবান। তারা কীভাবে অভিজ্ঞ হতে পারে, সেটিই চিন্তার বিষয় হলো। আজকাল এটা কঠিন। তাদের (ক্রিকেটার) মাথায় অনেক টুর্নামেন্ট এবং জিনিস ঘুরপাক খাচ্ছে।’

মুরালি কথাগুলো এমন সময়ে বলছেন, যখন তার দল শ্রীলঙ্কাও দিনেদিনে টেস্ট ক্রিকেটে ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে তারা। ইংলিশদের বিপক্ষে লঙ্কানদের একমাত্র জয়টি এসেছে প্রায় ১০ বছর পর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ