নরসিংদীতে নদীর ঘাটের ইজারা ও নৌকার সিরিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছুরি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে সাজিন নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আরও ৫ জন গুরুতর আহত হন। কাউরিয়াপাড়া প্রধান সড়কে শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১ নারীসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত সাজিন কাউরিয়াপাড়ার আমির হোসেনের ছেলে। সে আলীজান জেএম একাডেমির ৮ম শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন কাউরিয়াপাড়ায় নতুন লঞ্চঘাটের ইজারাদার ছিলেন মতিন মিয়া। এ বছর জুন মাসে আলমাস কমিশনারসহ আরও কয়েকজন নতুনভাবে ইজারা নেন। ইজারাদার পরিবর্তন হওয়ার পরও মতিন ও তার সমর্থকরা ঘাট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাতেন। ফলে মতিনের নৌকাগুলো বিনা সিরিয়ালে চলত। এতে বাধা দিতে গেলে মতিনের ছেলে রাব্বি নাজমুলসহ তার সমর্থকরা ইজারাদারদের লোকজনদের মারধর করতেন। একই সঙ্গে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা লুট করে নিয়ে আসতেন। শুক্রবার দুপুরে রাব্বিসহ কয়েকজন লঞ্চঘাটে গিয়ে হট্টগোল করেন। এতে বাধা দিলে তারা বর্তমান ইজারাদার আলমাস কমিশনারের সমর্থকদের মারধর করেন। পরে লঞ্চঘাট থেকে ইজারাদারের পক্ষের ৭-৮ জন মতিনের বাড়িতে নালিশ জানাতে আসেন। নালিশকারীদের সঙ্গে সাজিনও ছিল। ওই সময় মতিন তার ছেলেসহ ২০-২৫ সমর্থক ছুরি, রামদা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। ওই সময় তাদের এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে সাজিনসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে মতিনরা চলে যান। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সাজিনের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহতের স্বজন তাইফুর জানান, এ বছর ইজারা না পেলেও মতিন ও তার ছেলেরা ঘাটের কর্তৃত্ব ছাড়তে নারাজ। তাই প্রতিনিয়ত ঘাটে গিয়ে অত্যাচার করেন। তাদের টাকা-পয়সা না দিতে চাইলে ঘাটের লোকজনকে মারধর করেন।
সদর থানার এসআই সাইয়াদুর জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।