ক্রিকেট অনুরাগী আর টিম বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের জন্য বড় খবর, নিজ থেকে ওয়ানডে ক্যাপ্টেন্সি ছাড়া তামিম ইকবালের জায়গায় নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা হবে আগামীকাল।
মঙ্গলবার দুপুরে নতুন অধিনায়ক মনোনীত করতে এক জরুরি বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকরা। ৮ আগস্ট বেলা ২ টায় শুরু বিসিবি পরিচালক পর্ষদের এই জরুরি সভা।
বিসিবির অন্যতম সিনিয়র পরিচালক ও জাতীয় দল পরিচালনা, পরিচর্য্যা ও তত্ত্বাবধানের কার্যক্রম পরিচালনাকারী স্ট্যান্ডিং কমিটি ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সোমবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বোর্ড পরচালকদের জরুরি সভা। এজেন্ডা কি?
জালালের ব্যাখ্যা, ‘মূলত নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মনোনীত করতেই এ জরুরি বোর্ড সভা আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি ওই সভাতেই নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নির্বাচনের কাজ শেষ হবে। মিটিং শেষে নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের নাম ঘোষণা হবে।’
মাঝে সাকিব ও তামিমের বদলে কয়েকটি ম্যাচ ও একাধিক ফরম্যাটে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন লিটন দাস। তাকেই কি এশিয়া কাপে দল পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হবে? নাকি নাকি টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টির সঙ্গে পাশাপাশি ওয়ানডে ক্যাপ্টেনও করা হবে সাকিবকে?
সেটাই দেখার। তা নিয়েই যত কথা। নানা জল্পনা-কল্পনা। কথা-বার্তা শুনে মনে হচ্ছে বিসিবিও সাকিবকেই পরবর্তী ওয়ানডে অধিনায়ক করতে আগ্রহী। আর এটা সত্য যে, কোন হিসেব-নিকেশেই সাকিবের চেয়ে বেটার কোন অপশন বিসিবির হাতে নেইও। তাই ‘চ্যাম্পিয়ন’ অলরাউন্ডার সাকিবকেই হয়ত নতুন ওয়ানডে ক্যাপ্টেন হিসেবে বেছে নিতে পারে বিসিবি।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রথমদিন মানে গত বৃহস্পতিবার তামিম যেদিন অধিনায়ক ছাড়ার ঘোষণা দেন, তখন পাশে বসে নতুন ওয়ানডে ক্যাপেটন নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও গত ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু জ্যেষ্ঠ পুত্র আবহনী প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আবাহনী ক্লাবে বিসিবি প্রধানের উচ্চারণ, আসলে সাকিবকে অধিনায়ক করাই সবচেয়ে সহজ কাজ। অপর বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও সাকিবকেই ‘অভিয়াস চয়েজ’ বলে অভিহিত করেছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ‘দীর্ঘ মেয়াদে ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মনোনীত করা হলে এক নম্বর ও ‘অটো চয়েজ’ সাকিব আল হাসান। আর খন্ডকালীন সময়ে দল পরিচালনার দায়িত্ব দিলেই শুধু লিটন দাসের কাঁধে বর্তাতো দল পরিচালনার ভার।
যেহেতু সামনেই বিশ্বকাপ। এশিয়া কাপের পর পরই চলে আসবে নিউজিল্যান্ড। কিইউদের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ যাত্রা টাইগারদের। তার মানে বিশ্বকাপের আগেও আরও দুটি মিশন আছে। কাজেই শুধু এশিয়া কাপের জন্য কাউকে ক্যাপ্টেন করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ধরেই নিতে হবে যিনি এশিয়া কাপে অধিনায়ক হবেন, তিনিই বিশ্বকাপেও টিম বাংলাদেশের অধিনায়ক থাকবেন।
এখন দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের বিকল্প কেউ নেই। তারপরও সাকিবকে ৩ ফরম্যাটে অধিনায়ক করতে বিসিবিকে ভাবতে হচ্ছে। কিছু বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। তাহলো, সাকিব তিন ফরম্যাটে পুরো সময় দিতে পারবেন কি না?
বলার অপেক্ষা রাখে না, সাকিব ক্রিকেট ছাড়াও সামাজিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলেন নিয়মিত। এছড়া তার স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে সাকিবকে মাঝে মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র যেতে হয়ে।
সব মিলিয়ে তার কিছু ব্যক্তিগত, পেশাগত ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা আছে। সেগুলোকে ‘ম্যানেজ’ করে সাকিব ৩ ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব করার মত সময় বের করতে পারবেন কি না? শতভাগ মনোযোগ, মনোসংযোগী থাকতে পারবেন কি না? সেগুলোও বিবেচনায় আনা হচ্ছে।
সাকিবের সঙ্গে কথা বলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিসিবিকে। সাকিব রাজি না হলে লিটন দাসের অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
//এমটিকে