বিএনপি শুধু বলে তাদের সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি শুধু বলে তাদের সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছে। গাজীপুরে আসেন ফখরুল ভাই। দেখুন, ঢল কাকে বলে।

শনিবার বিকেলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন। এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি। সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিলেটে বিএনপির সমাবেশে ঢল নেই, সুরমা নদীর ঢল। আর এখানে গাজীপুরে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ। সিলেটের সঙ্গে গাজীপুরকে মিলিয়ে দেখুন। এখানে শুধু মহানগর, ওখানে ৫ জেলা। যেখানে সমাবেশ, সেখানে সারা দেশ থেকে ৭ দিন আগে থেকেই রওনা দেন। কারণ, ওখানে শুধু খাওয়া আর খাওয়া।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেছেন, বিএনপির মনে বড় জ্বালা। নিজের টাকায় শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু করেছেন। একদিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন করেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন উন্নয়ন কাকে বলে। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু হয়ে গেল। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দেখে বিএনপির মনে বড় জ্বালা। কালো চশমা পড়ে তারা কিছুই দেখতে পায় না। তারা অমাবস্যা দেখে।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আপনাদের লজ্জা করে না। শেখ হাসিনা দয়া করে আপনাদের দণ্ডিত আসামি নেত্রীকে বাসায় থাকতে দিয়েছেন। বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আপনারা
খোয়াব দেখুন, আপত্তি নেই। তবে নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের সুযোগ নেই। দুনিয়ার সব দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে হবে। শেখ হাসিনা সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।

তিনি বলেন, বিদেশিদের কাছে নালিশ করে করে বিএনপি এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে কোনো লাভ নেই।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, খেলা হবে, খেলা। বিএনপির আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভোট চুরি, দুর্নীতি-লুটপাট, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। আপনারা প্রস্তুত হয়ে যান। ডিসেম্বরে নাকি তারা মাঠ দখল করবে। খেলা হবে।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই কমিটি ঘোষণা করেন। এর আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে নাম জমা দেওয়ার জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে সম্মেলনে সভাপতি পদে দু’জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ষোলজন প্রার্থী হয়েছিলেন।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি, মেহের আফরোজ চুমকি, দেলোয়ার হোসেন, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, আনোয়ার হোসেন, সাহাব উদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু এমপি , স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, বেগম শামসুন নাহার, অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আতাউল্লাহ মন্ডল, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

দুপুর দুটোর পর পর জাতীয় পতাকা দলীয় পতাকা উত্তোলন করে ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এবং মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে সকাল থেকেই মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যানার- ফ্যাস্টুন নিয়ে ও বাদ্য বাজিয়ে বর্ণাঢ্য সাজে স্লোগান নিয়ে ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে জড়ো হতে থাকেন। দুপুরের আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় বিশাল ওই মাঠ।

গাজীপুর মহানগর গঠিত হবার পর এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলন। ২০১৩ সালে সিটি কর্পোরেশন গঠন হলে ৭ বছর আগে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে দুজনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলেও কেন্দ্রীয় নির্দেশেই এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের সর্বশেষ