মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

১৫ সেনা কর্মকর্তা সাবজেলে কী কী সুবিধা পাচ্ছেন

 

আওয়ামী লীগ শাসনামলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত অপরাধের এবং গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় এবং  এক মামলায় অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগার থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নেওয়া হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর-৫৪’কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যদিও দুইদিন পর ১৪ অক্টোবর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। কারাবিধি অনুযায়ী তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব কারা অধিদপ্তরের। সাব-জেলের নিরাপত্তায় ৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের খাওয়াদাওয়া কারাগার থেকেই দেওয়া হবে।

 

বাইরে থেকে খাবার দেওয়া বা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎও কারাবিধি মেনেই করতে হবে।  সাব-জেলটি তৃতীয়তলাবিশিষ্ট ভবন। এতে ১৬টি কক্ষ। প্রতি কক্ষে একজন করে থাকার ব্যবস্থা আছে। কারা সূত্র জানায়, সাব-জেলে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তার জন্য তিনবেলা খাবাবের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবারের মেন্যুতে সকালের জন্য আছে রুটি ও সবজি। দুপুরে থাকছে ডাল, ভাত, সবজি ও মাছ/মাংস। রাতে থাকছে মাছ/মাংস ও সবজি।  সাব-জেলের বন্দিদের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে-জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, তাদের রুমে একটি বিছানা, চেয়ার, একটি টেবিল, একটি পত্রিকা, একটি ফ্যান আছে। তাদের জন্য চা পানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসেই সাব-জেলের তদারকি করবেন জেল সুপার ও জেলার।

 

এছাড়া বাকিরা সেখানেই সশরীরে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের নেতৃত্বে আছেন তিনজন ডেপুটি জেলার। ডেপুটি জেলাররা তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ডেপুটি জেলাররা স্থায়ী কেউ নন। কয়েকদিন পরপর তাদের পরিবর্তন করা হবে। জানতে চাইলে এআইজি (প্রিজন্স) জান্নাতুল ফরহাদ বলেন বুধবার আমরা আসামিদের পুলিশের কাছ থেকে বুঝে পেয়েছি। আসামিরা এখন আমাদের অধীন সাব-জেলে আছেন। পরবর্তী সময়ে যখন তাদের আদালতে হাজিরা থাকবে, তখন পুলিশ হেফাজতে আদালতে নেওয়া হবে।

 

ফের আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী তাদের খাওয়াদাওয়াসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, ১৫ সেনা কর্মকর্তা সেনানিবাসে বাশার রোডের সাব-জেলেই থাকবেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার এবং জেলার সাব-জেলটি তদারকি করবেন। এছাড়া সার্বক্ষণিক একজন ডেপুটি জেলার সেখানে ডিউটি অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

 

ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাব-জেলে নিয়োজিত করা হয়েছে। কারাবিধি অনুযায়ী অন্যান্য ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের মতোই সুবিধা পাবেন এখানকার বন্দিরা। আসামিরা হলেন— মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।

শেয়ার করুন