রংপুরের তারাগঞ্জে কবরের মাটি তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল আটটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খালেকুজ্জামান। তিনি গতকাল শুক্রবার ভোরে মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাঁর স্ত্রী গভীর শোকপ্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, “মোর স্বামী তো মারামারি থামাতে গেছিল, কারও গায়ে হাত তোলে নাই। কিন্তু ওরা খুন্তি দিয়ে মাথা ফাটাইয়া মাইরা ফেলল। এখন আমাদের কী হবে? দুই সন্তান এতিম হয়ে গেল।”
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের কিসামত মেনানগর বড়বাড়ি গ্রামের আবদুল জব্বারের সঙ্গে খালেকুজ্জামানের ভাইদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। গতকাল ফজরের নামাজের পরে নিহত খালেকুজ্জামানের ভাই আবদুল ছালেক কবর জিয়ারত করতে গেলে তাদের সঙ্গে আবদুল জব্বারের ছেলে বাবু মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবু মিয়া, তাঁর ভাই লেবু মিয়া, দুলাল মিয়া ও চান মিয়া আবদুল ছালেককে মারধর করেন। খালেকুজ্জামান ও মাহবুবুর রহমান এসে তাদের উদ্ধার করতে গেলে খালেকুজ্জামানের মাথায় খুন্তি দিয়ে আঘাত করা হয়।
নিহতের মা ছালেমা বেগমও শোকে জ্ঞান হারান। পরে প্রতিবেশীরা তাঁকে পানি ঢেলে সচেতন করেন। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “মোর ছেলেটার দোষ কী? কেন ওরা মাইরা ফেলল? বিচার চাই।”
স্থানীয়রা জানায়, খালেকুজ্জামানের সহায়-সম্বল বলতে মাত্র ৩০ শতক জমি ছাড়া কিছু ছিল না। দিনমজুরি করে স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়েছে।
নিহতের ভাতিজা জান্নাতুল ইসলাম বলেন, “আমার নির্দোষ চাচাকে মেরেছে। খুনির ফাঁসি চাই।”
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ ফারুক জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।





