বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নারী উন্নয়নের নামে পশ্চিমা মূল্যবোধ চাপানোর অভিযোগ : প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া

নারী উন্নয়নকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা অর্থায়নে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রমে দেশীয় সংস্কৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, “নারী উন্নয়ন শব্দটি অনেক সময় অস্পষ্ট এবং পশ্চিমা মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার একটি কর্মসূচি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”

গোলাম কিবরিয়া মনে করিয়ে দিয়েছেন, যদি প্রকৃতভাবে নারী উন্নয়ন চাওয়া হয়, তবে প্রথমে নারী শিক্ষার সম্প্রসারণ, আর্থিক সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, “এনজিওগুলোকে তাত্ত্বিক কথা নয়, বাস্তব ফলাফল প্রদর্শন করতে হবে। কতজন নারী শিক্ষিত ও দক্ষ হয়েছে, কতজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা আইনজীবী তৈরি হয়েছে—সব কিছু প্রকাশ্যে তালিকাভুক্ত করা উচিত।”

তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমা মূলধারার কর্মসূচি নারীর নাম ব্যবহার করে বিদেশি স্বার্থ রক্ষা করছে। গুলশান বা বনানীতে বিলাসবহুল জীবনযাপনের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র নারীদের সেবা সম্ভব নয়। কিবরিয়া বলেন, “যতক্ষণ কর্মীদের মানসিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ দেশীয় সমাজের সঙ্গে একাত্ম না হবে, ততক্ষণ কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব নয়।”

প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া আরও উল্লেখ করেন, কিছু এনজিও ইসলামিক আইন ও কোরআনের বিধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, শিশু বিবাহ নিয়ে প্রশ্ন তোলে, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক অবিবাহিত নারীদের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি বলেন, “এনজিওগুলোর প্রকৃত লক্ষ্য সমাজে ব্যভিচার ও নৈতিক অবক্ষয় ছড়িয়ে দেওয়া এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা।”

তিনি সমালোচনা করেন যে, পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার গণতন্ত্র প্রক্রিয়া বাস্তবিকভাবে নারীর স্বার্থ রক্ষা করছে না। তিনি উদাহরণ হিসেবে মালি, নাইজার ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশের উদয়মান শক্তিকে উল্লেখ করেছেন, যেখানে পশ্চিমা প্রভাব কমছে।

গোলাম কিবরিয়ার মতে, নারী উন্নয়নের প্রকৃত মানদণ্ড হল নারীকে নিরাপদ, শিক্ষিত, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও মর্যাদার সঙ্গে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা—নাকি শুধুমাত্র বিদেশি স্বার্থে প্রমোট করা একটি প্রচারণা।

শেয়ার করুন