মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আসিফ নজরুলের প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক: রাশেদ খানের প্রতিক্রিয়া

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার দাবি করেন, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, আসিফ নজরুল কার কাছে এই প্রস্তাব করেছিলেন।

বুধবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্টে রাশেদ খান বলেন, ‘অথচ ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে বহাল রেখে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন নাহিদ ইসলাম। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনও আছে। এছাড়া গত ১৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে তারা নতুন সরকার গঠনের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেন। ৪ আগস্ট তাকে নতুন সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেন তারা।”

রাশেদ খান আরও বলেন, ‘অর্থাৎ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকা সময়েই নাহিদ ইসলামরা নতুন সরকারের ছক কষে ফেলেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতা আছে। আমার প্রশ্ন, তখন কি আসিফ নজরুল স্যার এটি জেনে নাহিদ ইসলামকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা না করে তাকে করা হোক? এমন কোনো বক্তব্য নাহিদ ইসলাম কখনও দেননি। গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস নিয়ে আসিফ মাহমুদ লিখিত বইতেও এর কোনো উল্লেখ নেই। এনসিপির নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এতোদিন পর এমন দাবি কেন তুললেন? এটি কি কোনো অসৎ উদ্দেশ্যের অংশ?’

রাশেদ খান বলেন, ‘গত বছর ৫ আগস্ট দুপুরে সেনাবাহিনী কল করে আসিফ নজরুল স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাকে বলা হয়, সেনাবাহিনী এই রক্তপাত ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে চায়। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়। তখন স্যার অনেকের পরামর্শ নিয়ে রক্তপাত ও গণহত্যা বন্ধে মধ্যস্থতা করতে উদ্যোগ নেন। সেই সময় প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়, সেনাপ্রধানের সঙ্গে তার বৈঠক এবং জরুরি ভাষণ। চারপাশে আনন্দে মানুষ উল্লাস করছে। হাসিনা ইতোমধ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। সেসময় স্যার এবং সেনাপ্রধানকে সমালোচনা করা হয়েছে, যা স্বাভাবিক। কিন্তু রক্তপাত বন্ধের উদ্যোগকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ ছিল না। আরও কয়েক হাজার মানুষ মারা যেত কি ভালো হতো? অনেকে পন্ডিতি কথা বলবেন, তবে তারা কি আরও রক্ত চাইছিল বা অস্ত্র হাতে বিপ্লব করতে মাঠে নামতে চাইছিল?’

রাশেদ খান আরও বলেন, ‘যাইহোক, এনসিপি আইন উপদেষ্টাকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতি পক্ষপাতী বলে অভিযোগ করে এবং বিভিন্ন মিথ্যাচার করছে। আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় থেকে। আমার মুক্তির জন্য তিনি আমার পরিবারের সঙ্গে রাজপথে নেমে সাহায্য করেছেন। তিনি নুরুল হক নুর, হাসান মামুন ও আমাদের ছাত্র সংগঠনের নেতা আখতারসহ অন্যদের জন্যও পদক্ষেপ নিয়েছেন। এমনকি নাহিদ আসিফসহ ৬ সমন্বয়ক পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাদের মুক্তির জন্য তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন, রাজপথে নেমেছেন।’

সবশেষে রাশেদ খান বলেন, ‘প্রতিটি আন্দোলন ও ছাত্রদের কার্যক্রমে আসিফ নজরুল একজন যোগ্য অভিভাবক ছিলেন। তার ভুল থাকলে সমালোচনা হতে পারে, কিন্তু তিনি প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন—এমন কোনো পাগলের প্রলাপ তিনি পরিবেশন করেননি।’

শেয়ার করুন